
আমাদের রক্তে কী আছে ?
অর্থাৎ কী কী উপাদানে রক্ত গঠিত
আমাদের রক্তে শতকরা ৫৫ ভাগ প্লাজমা (55% Plasma) থাকে। এর মধ্যে ৯০ ভাগ জল (90% Water), ৮ ভাগ প্রোটিন (8% Protein), আর ২ ভাগ হরমোন (2% Hormone) থাকে। শতকরা ১ ভাগ (1%) থাকে শ্বেত রক্তকণিকা। আর শতকরা ৪৪ ভাগ (44%) থাকে লোহিত রক্তকণিকা।
রক্ত তৈরির ইতিহাস
শরীরে রক্ত কীভাবে তৈরি হয় সেটা একটু জেনে নেওয়া যাক। আমাদের হাড়ের ভেতরে লাল স্পঞ্জের মতো একরকম টিস্যু থাকে, তাকে বোনম্যেরো (Bone marrow) বলে। বোনম্যেরোর মধ্যে যে সেল থাকে তাকে হেমাটোপয়েটিক স্টেম সেল (Hematopoietic stem cell) বলে। এই বোনম্যেরো কিডনি কে লোহিত রক্তকণিকা তৈরীর জন্য নির্দেশ পাঠায়। কিডনি থেকে একধরনের হরমোন এরেথ্রোপয়েটিন (erythropoietin) নির্গত হয়। কিডনি থেকে নির্গত এরেথ্রোপয়েটিন হরমোনের সহায়তায় হেমাটোপয়েটিক স্টেম সেল (Hematopoietic stem cell) প্রথমে অপরিণত লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করে। একে এরিথ্রোব্লাস্ট(erythroblast) বলা হয়। এতে নিউক্লিয়াস, ডিএনএ নানাবিধ সেল অর্গানেল গুলো থাকে। এই অপরিণত লোহিত রক্তকণিকা কালক্রমে পরিণত লোহিত রক্তকণিকায় পরিণত হয়। সেই সময় লোহিত রক্তকণিকায় কোনো সেল অর্গানেল থাকে না। যেটা থাকে তা হলো হিমোগ্লোবিন, এক ধরনের প্রোটিন যা আমাদের শরীরে অক্সিজেন পরিবহনে সাহায্য করে। এই পরিণত লোহিত রক্তকণিকাকে এরিথ্রোসাইট(erythrocyte) বলা হয়। এই হিমোগ্লোবিনের আয়ু ১২০ দিন।
রক্তের লোহিত রক্তকণিকা থেকে দুই ধরনের রোগ হয়। লোহিতকণিকা কম হবার ফলে অ্যানিমিয়া(Anemia) হয়, আর বেশী হলে পলিসাইথেমিয়া(Polycythemia) । দুটিকেই রোগ বলে গণ্য করা হয়। এবং দুটির জন্যই উপযুক্ত চিকিৎসার প্রয়োজন।

লোহিত রক্তকণিকার মতো শ্বেত রক্তকণিকার থেকেও দুই ধরনের রোগ হয়। এই রক্তকণিকা কম হলে লিউকোপেনিয়া(Leukopenia) হয় আর বেশী হলে লিউকোসাইটোসিস(Leukocytosis) হয়।

হেমোস্টাসিস(Hemostasis) একটি প্রক্রিয়া যা রক্তনালী থেকে রক্তপাত বন্ধ করে। এই হেমোস্টাাসিস থেকে দুই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়
-
রক্তপাত জনিত সমস্যা,
-
থ্রম্বোসিস বা রক্ত জমাট বাধাঁর সমস্যা।